দেশের ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অনুমতি দেয়ার এ তথ্য জানিয়ে মন্ত্রণালয় আগামী মঙ্গলবার প্রধান আমদানি-রফতানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অনুযায়ী এবার ১০০, ১৫০, ২০০, ৩০০, ৪০০ ও ৫০০ টন করে চাল রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাতে মোট রফতানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৮ হাজার ১৫০ টন। অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তবে সরকার চাইলে যেকোনো সময় অনুমতি বাতিলও করতে পারবে।
এবিষয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, যেসব শর্তে সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেগুলো মেনেই রফতানিকারকেরা চাল রফতানি করবেন বলে আশা করছি। সুগন্ধি চাল রফতানি হলে দেশে কিছু বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, প্রতি কেজি চালের রফতানি মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে ১৯৫ টাকা।
অন্য শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি চাল কেউ রফতানি করতে পারবে না। আর প্রতিটি চালান জাহাজীকরণ শেষে রফতানিসংক্রান্ত সব কাগজপত্র বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। অনুমোদনপত্র কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয়। অর্থাৎ অনুমোদিত রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান নিজে রফতানি না করে অন্যের মাধ্যমে রফতানি করতে পারবে না অর্থাৎ সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়া যাবে না। রফতানিনীতি আদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে সব সময়ই চাল রফতানি নিষিদ্ধ। তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে সুগন্ধি চাল রফতানির সুযোগ রয়েছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রফতানির মাধ্যমে দেশে ২৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার এসেছিল। পরবর্তী ২০২০-২১ অর্থবছরে তা কমে হয় ২০ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ ছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে এই আয় আরও কমে ১০ লাখ ৭০ হাজার ডলারে নেমে আসে। এরপর ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরকার সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমতি স্থগিত রাখে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত রফতানি কার্যক্রম বন্ধ ছিল। পরে গত জানুয়ারিতে সরকার আবার রফতানি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অনুমতি নিলেও অনেকে রফতানি করতে পারে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানায়, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশ সুগন্ধি চাল রফতানি শুরু করে। প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রফতানি হয়। পরের বছরগুলোতে রফতানি বাড়তে থাকে, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে সুগন্ধি চাল উৎপাদিত হয় ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। প্রতিবছর রফতানি হয় ১০ হাজার টন। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে এ চাল রফতানি করে আসছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে রফতানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে। তাতে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসী মালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল ও দুলাভোগ ইত্যাদি চালের নাম রয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

সুগন্ধি চাল রফতানির অনুমতি পেল ১৩৩ প্রতিষ্ঠান
- আপলোড সময় : ১১-০৪-২০২৫ ১২:০৯:৪০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৪-২০২৫ ১২:০৯:৪০ পূর্বাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ